.

.

গোমনাতীর কাসা শিল্প ।কাসা শিল্পের শেষ স্মৃতিটুকু ধরে আছেন তেতুলতলার হাফিজার রহমান।

titu efetkhar | মঙ্গলবার, নভেম্বর ০৫, ২০১৩ | 0 মন্তব্য(গুলি)



এক সময় রংপুর জেলার ভূগোলে লেখা ছিল গোমনাতী কাসা-পিতলের জন্য বিখ্যাত৷এখানে চমত্কার বাসনপত্র তৈরী হতো৷ ধিরে ধিরে বিলুপ্ত হতে থাকে কাসা-পিতলের বাসনপত্র৷যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলে আসে এলুমিনিয়াম, স্টি, প্লাস্টিক আর মেলামাইন৷ যদিও এখানে হিন্দুদের বিয়েতে প্রথা অনুযায়ী কাসার বাসন দরকার হয়৷কিন্তু দাম খুব বেশী৷ এক সময় আভিজাত্য প্রকাশ পেত কাসা-পিতলের বাসনপত্র দ্বারা৷ সময়ের সাথে সাথে পরিবর্তন হয়েছে রুচি,চাহিদা এবং আভিজাত্য প্রকাশের উপকরনের।একসময় গোমনাতিতে এই ব্যবসা ছিল রমরমা৷ এখন কাসার দাম প্রতি কেজি ১২৫০টাকা৷ আগে ছিল ৫০/৬০ টাকা৷ অনেক ব্যবসায়ীর বসবাস ছিল এই ইউনিয়নটিতে,ছিলেন অনেক কারিগর।তাদের হাতের গড়া জগ,বাটি,পানের ডাবলা,থালা ছিল চোখ ধাঁধানো৷ কাসা-পিতলের কাঁচামাল ওরা সংগ্রহ করতেন ভারতের হলদিবাড়ী, জলপাইগুড়ি, কচুবিহার হতে৷ মাটির ফ্রেমের মধ্যে গলানো কাসা-পিতল দেয়া হতো৷ তৈরী করা হতো সুদৃশ্য বাসনপত্র৷ নয়ন জুড়ানো এসব জিনিস ছিল ধনীদের ঘরে৷ কাসা-পিতল গলানোর জন্য ছিল আলাদা চিমনি৷ কয়লা ছিল এর প্রধান জ্বালানী৷ এখন মাত্র ১৫টি  পরিবার এখানে বসবাস করেন যারা কাসা-পিতলের বাসন তৈরী করতেনচাহিদা না থাকায় ওরা পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় জড়িয়ে পড়ে৷ কেউ ভ্যানচালক, কেউবা রিকশা- সাইকেলের মেকার, কেউ দিনমজুর হিসেবে কাজ করে৷ এদের মধ্যে সহিদুল ইসলাম করেন বাঁশের ব্যবসা৷ খোকাবুড়া বর্তমানে পক্ষাঘাতে আক্রান্ত হয়ে করুন দিনানুপাত করছেন।এখাকার তৈরী বাসনপত্র রপ্তানি হতো বিভিন্ন জেলায় এমনকি ভারতেবিক্রি হতো ৷ কাসা-পিতলের বাসনপত্র হারিয়ে গেছে৷ এই পেশা ছেড়ে অধিকাংশের সচ্ছলতা নেই৷পুণর্বাসনের সুযোগও হয়নি৷ তবে কাসা শিল্পের শেষ স্মৃতিটুকু ধরে আছেন, হাফিজার রহমান।পুরাতন কাসা -পিতলের মেরামত এবং অর্ডার পেলে কিছু নতুন বাসন তৈরী করেন তিনি।তবে তিনি হতাসার সুরে বলেন,চাহিদা না থাকায় এবং কাঁচামাল ও পুঁজির অভাবে হয়তো বেশীদিন ধরে রাখতে পারবেননা ।হয়ত তিনি সময় এর কাছে আত্বসমর্পন করবেন। আগামী প্রজন্ম হয়ত কাসা-পিতলের নামই চিনবেনা।কিন্তু গোমনাতী নামের সঙ্গে জড়িয়ে থাকবে কাসা-পিতলের নাম।

Category:

গোমনাতী ওয়েব সম্পর্কে:
নীলফামারী জেলার সকল সংবাদ এবং সকল তথ্য সবার আগে পেতে চোখ রাখুন গোমনাতী ওয়েবে।

0 মন্তব্য(গুলি)